ধাপে ধাপে ফেশিয়ালের নিয়ম
দেখতে দেখতে শেষ হয়ে এলো পবিত্র ঈদ-উল-আজহা। ঈদকে ঘিরে ঘরে ঘরে দুয়েক সপ্তাহ আগে থেকেই প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায়। কোরবানির পশু কেনা, ঈদের দিন জবাই করে মাংস বিলি করা, গুছিয়ে ফ্রিজে ওঠানো এসবেই দিন পার হয়ে যায়। এতোসব কাজ করার পর নিজেকে দু'দণ্ড সময় আর দেওয়া হয়ে ওঠেনা। ঈদের সন্ধ্যায় ভারি মেকআপ ও দাওয়াতে হাজিরা দিতে দিতে আমাদের ত্বক হয়ে উঠতে পারে বিবর্ণ ও নিষ্প্রাণ। তাহলে উপায়?
ঘাবড়ে যাবার কিছু নেই! আজকে আপনাদের জানিয়ে দেওয়া হবে ঘরে বসেই সহজে কয়েক ধাপেই ফেশিয়াল করে ফেলতে পারেন। পনেরো দিনে একবার এ ফেশিয়াল করলে আপনার ত্বক উজ্জ্বল হবে,মরা কোষ দূর হবে, রক্ত চলাচল বাড়বে এবং ত্বক প্রাণ ফিরে পাবে। তবে চলুন কথা না বাড়িয়ে জেনে আসা যাক-
প্রথম ধাপ- ক্লিনজিং
ফেশিয়ালের প্রথম ধাপ হলো 'ক্লিনজিং'। মুখে মেকআপ থাকলে পুরোপুরি সেটা তুলে ফেলে ভালো একটা ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে। আপনি চাইলে কাঁচা দুধ ব্যবহার করতে পারেন। বাটিতে কাঁচা দুধ নিয়ে সেখানে একটি তুলার বল ডুবিয়ে পুরো মুখ পরিষ্কার করে নিন। অতঃপর প্রচুর পরিমাণ পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। আপনি চাইলে বাজারে যে ফেসওয়াশ পাওয়া যায়, তাও ব্যবহার করতে পারেন। আপনার ত্বক তৈলাক্ত হলে অয়েল ফ্রি ক্লেনজার এবং শুষ্ক ত্বক হলে ক্রিমি ফেসওয়াশ ব্যবহার করুন।
দ্বিতীয় ধাপ- এক্সফোলিয়েটিং
ফেশিয়ালের দ্বিতীয় ধাপ হলো এক্সফোলিয়েটিং। এটির সাহায্যে আপনার মুখের যাবতীয় মরা কোষ দূর হয়ে যায়। প্রাকৃতিক স্ক্রাব ব্যবহার করতে পারলেই ভালো। ভেজা ত্বকে আলতোভাবে স্ক্রাব করতে থাকুন। চোখের চারপাশ বাঁচিয়ে করবেন অবশ্যই। এতে করে আপনার ত্বকের টেক্সচার ভালো হবে এবং কোঁচকানো ভাব কমবে।
তৃতীয় ধাপ- ত্বকে ভাপ দেওয়া
ফেশিয়ালের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হল মুখে ভাপ দেওয়া। এর সাহায্যে মুখের পোর বা ছিদ্র খুলে গিয়ে সকল ময়লা ও বিষাক্ত ভাব দূর করে দেয়। বড় একটি পাত্রে হালকা গরম পানি নিন। এর পর মাথার উপর দিয়ে একটি তোয়ালে জড়িয়ে জোরে জোরে নিশ্বাস নিন এবং ছাড়তে থাকুন। আপনি চাইলে পানিতে গোলাপ কিংবা ল্যাভেন্ডার যোগ করতে পারেন। ১০-১৫ মিনিট ধরে কাজটি করতে থাকুন। শেষ হলে ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধিয়ে নিন। ব্যাস হয়ে গেলো ভাপ দেওয়া।
চতুর্থ ধাপ- ফেসপ্যাক
ত্বকে ভাপ দেওয়ার পর পরই ভালো একটি ফেসপ্যাক ব্যবহার করুন মুখে। আপনার ত্বকের ধরণ বুঝে ফেসপ্যাক পছন্দ করুন। তৈলাক্ত ত্বকের জন্য ক্লে-মাস্ক, শুষ্ক ত্বকের জন্য হাইড্রেটিং মাস্ক এবং সংবেদনশীল ত্বকের জন্য জেল-টাইপ মাস্ক ব্যবহার করা উচিত। দু'চোখের উপর দুটো গোলাপ জলে ভেজানো তুলার বল কিংবা শশা রাখতে পারেন। ত্বকের সঙ্গে সঙ্গে চোখও সতেজ হবে।
পঞ্চম ধাপ- ময়েশ্চারাইজিং
ফেশিয়ালের পঞ্চম এবং সর্বশেষ ধাপ হলো ময়েশ্চারাইজিং করা। এটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যদি ভালো মানের একটি ক্রিম ব্যবহার না করেন, তাহলে আপনার উপরের এতোগুলো ধাপ সম্পন্ন করা সম্পূর্ণ বৃথা যাবে। আপনার ত্বক অধিক তৈলাক্ত হলে মুখে গোলাপ জল স্প্রে করতে পারেন এবং শুষ্ক হলে অবশ্যই ক্রিম ব্যবহার করবেন।
এই তো, এগুলোই ছিল ফেশিয়ালের কয়েকটি সহজ ও সুন্দর উপায়। হাতের কাছে যা-ই আছে, তা দিয়ে চট করে ফেশিয়াল করে ফেলুন এবং কোমল ও শুভ্র ত্বক উদঘাটন করুন। মনে রাখবেন, নমনীয় ত্বকে কিন্তু মেকআপ ভালো বসে। ঈদের শুভেচ্ছা সকলকে।