প্রসবের সাড়ে তিন মাস পর পেট থেকে বের হল গজ! ভুয়া চিকিৎসককে থানায় সোপর্দের নির্দেশ
সন্তান প্রসবের সময় করা অস্ত্রোপচারের সাড়ে তিনমাস পর পটুয়াখালীর প্রসূতি মা মাকসুদা বেগমের পেট থেকে গজ বের করার ঘটনায় ভুয়া চিকিৎসক অর্জুন চক্রবর্তী ওরফে রাজন দাসকে শাহবাগ থানায় সোপর্দে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। পরে তার বিরুদ্ধে থাকা বাউফল থানার মামলায় শ্যোন অরেস্ট দেখাতে বলা হয়েছে। বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হক সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চ আজ এ আদেশ দেয়। মামলার শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি এটর্নি জেনারেল শশাঙ্ক শেখর সরকার। পটুয়াখালীর সিভিল সার্জনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী শামসুদ্দিন বাবুল। ভুল অস্ত্রোপাচারের শিকার মাকসুদা বেগমের পক্ষে শুনানি করেন ইমরান এ সিদ্দিক। আর ক্লিনিকের পরিচালক ও নার্সের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. নজরুল ইসলাম। মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট তোফায়েল সিকদারের (মিশু সিকদার) পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. আইলাদ হোসেন। আর ভুয়া চিকিৎসক রাজন দাসের পক্ষে আইনজীবী গোলাম নবী শুনানি করেন। আইনজীবী ইমরান এ সিদ্দিক সাংবাদিকদের বলেন, ভুয়া চিকিৎসক, ক্লিনিকের মালিক, নার্স ও মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্টের বিরুদ্ধে মামলা করার নির্দেশ দেয়ার পর আমরা ডেপুটি রেজিস্ট্রারের কক্ষে যাই। খোঁজ নিয়ে জানা যায় রাজনের বিরুদ্ধে এ ঘটনায় বাউফল থানায় একটি মামলা আছে। যেহেতু এক অপরাধে দুই মামলা হয় না, তাই দুপুর একটার দিকে বিষয়টি আদালতের নজরে আনা হয়। আদালত রাজনকে শাহবাগ থানায় সোপর্দ করতে নির্দেশ দেয়। ১৩ ডিসেম্বর এ বিষয়ে আদালত পরবর্তী আদেশের জন্য দিন ধার্য করেছেন। গত ২৩ জুল্ইা পটুয়াখালীর সিভিল সার্জন ও বরিশাল মেডিক্যালের গাইনি বিভাগের প্রধানসহ তিনজনকে তলব করে হাইকোর্ট। এ ছাড়া পটুয়াখালীর বাউফলের নিরাময় ক্লিনিকের মালিককে হাজির হতে বলা হয়। একটি জাতীয় দৈনিকে গত ২২ জুলাই ‘সাড়ে তিন মাস পর পেট থেকে বের হল গজ!’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনটি সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী মো. শহিদউল্লাহ আদালতের নজরে আনার পর রুল জারিসহ হাইকোর্ট আদেশ দেয়।
ওই পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘অস্ত্রোপচারের সাড়ে তিন মাস পর বরিশালে মাকসুদা বেগম (২৫) নামের এক নারীর পেট থেকে গজ বের করা হয়েছে। মুমূর্ষু অবস্থায় ওই নারীকে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়েছে। চিকিৎসকেরা বলেন, দীর্ঘদিন পেটের ভেতর গজ থাকায় খাদ্যনালীতে অনেকগুলো ছিদ্র হয়ে গেছে। মাকসুদা বেগমের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় রাতে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে স্থানাস্তর করা হয়। মাকসুদা পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার বিলবিলাস গ্রামের মো. রাসেল সরদারের স্ত্রী। গত মার্চে অস্ত্রোপচার করে মাকসুদা একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। তখন তার পেটে গজ রেখে সেলাই করে দেন চিকিৎসক।’