আর সিরিয়ালে অভিনয় করবেন না অঞ্জনা, জেনে নিন কারন
বাংলা টেলিভিশনের পরিচিত মুখ অঞ্জনা বসু। সম্প্রতি এক সর্ব ভারতীয় গন মাধ্যমের সাথে একান্ত সাক্ষাৎকার দিয়েছেন এই শিল্পী। ২৪ লাইভ বাংলা নিউজের দর্শকদের জন্য হুবুহু তুলে ধরা হলো এই সাক্ষাৎকার।
বড় পর্দায় আসছে তাঁর নতুন ছবি। পাশাপাশি ছেলের ভবিষ্যৎ গড়তেও ব্যস্ত অঞ্জনা বসু
প্র: নতুন ছবি করার অভিজ্ঞতা শুনব আগে... উ: ‘আমি আসবো বলে’ অঞ্জন দত্তর সঙ্গে আমার দ্বিতীয় ছবি। এখানে প্রথম অঞ্জনদার সঙ্গে আমি স্ক্রিন শেয়ার করেছি। অঞ্জনদার সঙ্গে কাজ করার আলাদা মজা আছে। উনি অনেক স্বাধীনতা দেন। খুব কম পরিচালকই এটা করতে জানেন। প্র: ছবিতে আপনার লুক কেমন? উ: রোজকার জীবনে আমি ভারতীয় পোশাকেই বেশি স্বচ্ছন্দ বোধ করি। যদিও এই ছবিতে চরিত্রের প্রয়োজনে অনেক বেশি পশ্চিমি পোশাক পরতে হয়েছে। প্র: ছোট পর্দায় এখন আর আপনাকে সে ভাবে দেখা যাচ্ছে না কেন? উ: আসলে এই বছর আমার ছেলের আইএসসি ছিল। এই সময়টা ওকে গাই়ড করার খুব দরকার ছিল। গত দেড় বছর ধরে ছেলেটা ভীষণ ভুগেছে। তাই ওর পাশে থাকাটাও খুব জরুরি ছিল। আবার ধারাবাহিকে অভিনয় করলে আমাদের অনেকটা সময় চলে যায়। সিনিয়র হয়ে গিয়েছি বলে কোথাও হয়তো কিছুটা ছাড় পাই।
কিন্তু যেখানে কাজের জন্য ইউনিটের সকলকে রাত দুটো অবধি থাকতে হচ্ছে, সেখানে আমি ব্যক্তিগত কারণে মাঝপথে ফ্লোর ছেড়ে চলে যেতে পারি না। গত দু’বছর ছেলেকে একদম সময় দিতে পারিনি। তাই আপাতত ছোট পর্দায় আমি আর কাজ করব না। প্র: প্রথম দিকে তো মুম্বইয়ে কাজ করেছেন। নতুন কোনও পরিকল্পনা আছে কি? উ: আমি পুরোপুরি এই জায়গাটা ছেড়ে চলে যাইনি কখনও। এখানে কাজ করতে করতেই মুম্বইয়ের কাজগুলো পেয়েছিলাম। কিন্তু মুম্বইয়ের কাজ না চালিয়ে এখানে ফিরে আসায়, আমার যে ক’জন শুভাকাঙ্ক্ষী রয়েছেন, তাঁরা আমাকে শুধু মারতে বাকি রেখেছিলেন। প্র: তা হলে তখন মুম্বইয়ে কাজটা চালিয়ে যাননি কেন? উ: আমি যখন কাজ করতে শুরু করি, তখন পটনায় থাকতাম। পটনা থেকে কলকাতায় এসে শেকড় গড়তে অনেকটা সময় লেগে গিয়েছিল। তাই আবার কলকাতা থেকে মুম্বই গিয়ে সব কিছু নতুন করে শুরু করার পরিশ্রমটা করতে চাইনি। যখন আমি মুম্বইয়ে যেতে পারতাম, তখন ছেলে ক্লাস ফাইভ-সিক্সে পড়ে। ওর সেই বয়সটায় আমি ওকে একদম নিজের কাছছাড়া করতে চাইনি। প্র: এখন আফসোস হয়? উ: না, সেটা আমার সত্যিই মনে হয় না। আমি যখন ছোটবেলায় ফোর-ফাইভে পড়তাম, তখন থেকেই অভিনয় করার খুব ইচ্ছে ছিল। নায়িকা নয়, বরাবরই অভিনেত্রী হতে চেয়েছি। আমার বাবার নাটকের একটা দল ছিল। বছরে একবার করে পাড়ায় আর বাবার অফিসে নাটক হতো। কিন্তু সেখানে আমার অভিনয় করা বারণ ছিল। বাবা একদম পছন্দ করতেন না।
বলতেন, ‘মন দিয়ে প়ড়াশোনা করো।’ তার পর তো পড়াশোনা শেষ করে বিয়ে হয়ে গেল। আমি যখন অভিনয়ে আসি, তখন আর আমার নায়িকা হওয়ার বয়স নেই। কিন্তু অভিনয়টা করে গিয়েছি মন দিয়ে। আর এত দিনে যা পেয়েছি, সেটাই আমার কাছে অনেক। এর বেশি স্বপ্ন নেই। ছেলেটা যদি একজন সুন্দর মানুষ হয়, নিজের জীবনে প্রতিষ্ঠিত হয়, সেটাই আমার কাছে আনন্দের, সুখের।
- মূল লেখা আনন্দ বাজার পত্রিকা