বেবি কী এজমায় আক্রান্ত, দেখুন সুস্থ রাখার কিছু টিপস
আপনার বেবি কী এজমায় আক্রান্ত? ওকে সুস্থ রাখতে এই ৫ টি টিপস ফলো করুন
এজমা বা শ্বাস কষ্টজনিত সমস্যা খুবই মারাত্মক একটি রোগ। আর ছোট শিশুদের জন্য যে এটা আরো ঝুঁকিপূর্ণ তাতে তো কোন সন্দেহই নেই। তাই আসুন জেনে নিই আপনার শিশুকে এজমার ঝুঁকিমুক্ত রাখতে কয়েকটি প্রয়োজনীয় টিপস।
ঘরের মাঝে ধূলোবালির প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করুন
একটা জিনিস মাথায় রাখুন। ছোট শিশুরা কিন্তু তাদের দিনের বড় একটি অংশ বাড়ির ভেতরেই কাটিয়ে দেয়। তাই ছোট শিশু বাড়িতে যে কক্ষে থাকে, সে জায়গাটির পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা সবচেয়ে বেশি গুরত্বপূর্ণ। আর শিশুকে এজমা মুক্ত রাখার কাজটির প্রাথমিক কাজগুলোও এখান থেকেই শুরু করতে হবে। অন্যথায় আপনি সারা বাড়ি পরিষ্কার রাখার পরও আপনার শিশুর এজমাতে আক্রান্ত হবার ঝুঁকি থেকেই যাবে। এখন আপনার মনে প্রশ্ন আসাটা খুব স্বাভাবিক, "কিভাবে আমি কাজগুলো শুরু করবো?" খুবই ভালো ও যুক্তিযুক্ত প্রশ্ন। প্রথমেই শিশুর ঘরের জানালার পর্দা ও মেঝেতে যদি কার্পেট বিছানো থাকে সেগুলো সরিয়ে ফেলুন। এগুলোতে প্রচুর ধূলোবালি জমে যা হয়তো আমরা খেয়াল করি না। তাই এগুলো নিয়মিত পরিষ্কার রাখুন, এটা অবশ্যই করতে হবে।
এরপরে আপনাকে নজর দিতে হবে শিশুর খেলনার জিনিসগুলোর দিকে। শিশুরা খেলতে খেলতে এগুলো হাতে নেয়, মুখের ভেতরে দেয়। তাই খেলনার জিনিস যা তার জন্য কেনা হয়েছে, এগুলো নিয়মিত পরিষ্কার রাখুন। যেগুলো পানিতে ধুয়ে পরিষ্কার করা সম্ভব, সেগুলো গরম্ পানি দিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার করুন।
এছাড়া শিশুর বিছানা ও বালিশের জন্য এরকম কাপড় বা কাভার বেছে নিন, যেগুলো এজমা সৃষ্টিকারী উপাদান জমতে বাধা দেয়।
ঘরের মাঝে সিগারেটের ধোঁয়াকে "না" বলুন
এই বিষয়টি নিয়ে আমরা একেবারেই সচেতন নই। এদেশে প্রকাশ্যে ধূমপান করার সময় যেহেতু অন্যের সমস্যা হচ্ছে কিনা সেটাই কেউ ভাবে, সেখানে ঘরের ছোট শিশুদের সামনেই সিগারেট খাওয়াটা অনেকে অভ্যাসে পরিণত করে ফেলেছেন। ধুমপানকে "না" বলুন। আর আপনার ঘরে যদি ছোট শিশু থাকে তবে ধূমপানকে "অবশ্যই না" বলুন। সিগারেটের ধোঁয়া এজমার একটি অন্যতম কারণ। অনেকে ভাবেন শিশুর কাছ থেকে দূরে বা অন্য রুমে ধূমপান করলে বোধ হয় শিশুর জন্য তা ক্ষতিকর নয়। এটা সম্পুর্ণ ভুল ধারণা। কারণ যখন আপনি ধূমপান করছেন তখন সিগারেটের ধোঁয়া আপনার চুলে ও পোশাকে লেগে যাচ্ছে। এরপর আপনি যখন শিশুকে কোলে নিচ্ছেন, সেটা সে তার নিঃশ্বাসের সাথে গ্রহণ করছে। তাই এটা আপনার দায়িত্ব, আপনার ছোট শিশুটির জন্য হলেও ধূমপান ছেড়ে দেয়া।
পোষা প্রাণী থেকে শিশুকে দূরে রাখুন
আমরাই অনেকে ঘরে বিড়াল বা অন্য প্রাণী পুষে থাকি। এগুলোর দেহের লোমও অনেক সময় শিশুর এজমার কারণ হতে পারে। যদি এরকম হয়, তবে সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে, বাড়িতে এরকম কোন পোষা প্রাণী না রাখা। আর সেটা সম্ভব না হলে শিশুর ঘরে বিড়াল বা অন্য প্রাণী ঢুকতে না দেয়া উচিত।
হাত রাখুন জীবাণুমুক্ত
হাতের মধ্যে থাকা জীবাণুর থেকে শুধু এজমা নয়, অনেক ধরণের অসুখের উদ্রেক হতে পারে। তাই খাবার রান্না/পরিবেশন করা এবং খাবার খাওয়ার আগে অবশ্যই ভালভাবে হাত ধুয়ে নিতে হবে। এক্ষেত্রে ব্যবহার করবেন জীবাণুনাশক হ্যান্ডওয়াশ। তবে আজকালকার ব্যস্ত জীবনে প্রায় প্রতিদিনই বাইরে থাকতে হয় অনেকক্ষণ। এবং দরকার এর সময়ে হ্যান্ডওয়াশ বা সাবান নাও পেতে পারেন। তাই বাইরে যাবার সময় ইন্সট্যান্ট হ্যান্ড স্যানিটাইজার ক্যারি করুন।
ঘরকে রাখুন তেলাপোকা মুক্ত
তেলাপোকা তো সব জায়গাতেই আছে, এটা নিয়ে ভেবে কী হবে? ভুল। সবচেয়ে পরিষ্কার বাড়িতেও তেলাপোকা থাকতে পারে। শহরে যেসব শিশুরা বড় হয়, তাদের এজমার একটা প্রধান কারণ তেলাপোকা। তাই অভিভাবকদের উচিত যেকোনোভাবেই হোক বাড়িকে তেলাপোকা থেকে মুক্ত রাখা। এজন্য কিছু কাজ অবশ্যই করতে হবে। ঘরের সব আবর্জনা প্রতিদিন বাইরে ডাস্টবিনে ফেলে দিতে হবে ও যেকোন পচনশীল খাবার বেশিদিন ঘরে ফেলে রাখবেন না। যেসব পথ দিয়ে তেলাপোকা ঘরে ঢুকতে পারে সেগুলো বন্ধ করতে হবে।
অ্যারোসোল/স্প্রে বাছাইয়ে সাবধান হউন
ডিওডরেন্ট অথবা পারফিউম স্প্রে যেটাই ব্যবহার করবেন, তার আগে নিশ্চিত হয়ে নিতে হবে যে এটা আপনার অ্যাজমার সমস্যা তৈরি করছে কিনা। একই ধরণের সাবধানতা অবলম্বন করুন পোকামাকড় তাড়ানো/নিধন করার অ্যারোসোল এর ক্ষেত্রেও। পরিবেশ ও মানব দেহের ক্ষতি করেনা এমন অ্যারোসোল বেছে নিন।
শিশুর খাদ্যতালিকা নির্ধারণে সতর্ক থাকুন
কিছু খাবার শিশুর জন্য এজমা ও এলার্জির কারণ হতে পারে। তাই শিশুর খাবার নির্বাচনে হোন সতর্ক। এরকম কিছু খাবারের মাঝে আছে ডিম, গরুর দুধ, বাদাম, সয়া ইত্যাদি।
শিশুর এজমা নিয়ে সচেতন হোন ও জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন, যদি দরকার হয়।