24 Live Bangla News

কোন ত্বকে কোন ক্রিম ভালো? দেখে নিন

গুটি গুটি পায়ে শীতের আমেজ চলে এসেছে। রাত বাড়ার সাথে সাথে ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা হিমেল হাওয়া শীতের আগমনী বার্তার জানান দিচ্ছে। শীতকালে আমাদের ত্বক সহজেই শুষ্ক হয়ে যায়। এর কারণ হলো শীতে বাতাসের আর্দ্রতা কম থাকে বিধায় ত্বকের এপিডার্মাল লেয়ার থেকে আর্দ্র ভাব কমে যায়। শীতকালে অনেকেই বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক উপাদানযুক্ত ক্রিম ব্যবহার করে নিজেদের ত্বককে নরম রাখতে চান। শীতে আপনার ত্বককে সতেজ রাখতে এখনি প্রয়োজন সঠিক পরিচর্যা—
শুষ্ক ত্বক:
শীতে শুষ্ক ত্বক আর্দ্রতা হারিয়ে আরও যেন দিশেহারা হয়ে পড়ে। তাই এ ধরনের ত্বকের চাই বাড়তি যত্ন। সে কারণে শীতে তো বটেই বরং শীত আসার আগে থেকেই শীতের রুক্ষ আবহাওয়া মোকাবেলা করার প্রস্তুতি নিতে হবে।
বিভিন্ন উৎু ঝশরহ ঈৎবধস- যুগ যুগ ধরে আমরা ব্যবহার করে আসছি আমরা। সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে বিভিন্ন কোম্পানিও তাদের ফর্মুলা গুলোতে পরিবর্তন এনেছে। এই ক্রিমি ফর্মুলা ত্বকের গভীরে পৌঁছে ত্বক কে করে তোলে চটপট প্রাণবন্ত। ডারমাটোলজিক্যালি টেস্টেড এসব ক্রিম সেনসিটিভ ত্বকের অধিকারীরাও নিশ্চিন্তে ত্বকে বুলিয়ে নিতে পারেন। খুব সহজেই লোকাল মার্কেটে আপনি পেয়ে যাবেন বিভিন্ন ব্রান্ডের ক্রিম।

অন্য কারো ত্বকে খুব ভালো কাজ করেছে শুনে নিজেও বাজার থেকে কিনে আনলেন একই ক্রিম। ব্যবহারের পর ত্বক সুন্দর হওয়া তো দূরের কথা, উল্টো মুখে লাল লাল ফুসকুড়ি উঠে অবস্থা আরো খারাপ হয়ে গেল। আর অমনি দোষ গিয়ে পড়ল সেই প্রসাধনীর ওপর। কিন্তু একবার ভেবে দেখুন তো, যার কথা শুনে এটি কিনেছিলেন, তার ও আপনার ত্বকের ধরন এক কিনা?
অনেক সময় না বুঝেই অনেক প্রসাধনী ব্যবহারের ফলে ত্বক ও চুলের ক্ষতি হতে পারে। তাই সৌন্দর্যচর্চার যে কোনো সামগ্রী বেছে নেয়ার আগে কিছু বিষয় জেনে নেয়া দরকার। এ নিয়ে পরামর্শ দিয়েছেন রূপবিশেষজ্ঞরা।
এখন প্রায় প্রতিটি ভালো প্রসাধনী পণ্যের গায়ে উল্লেখ করাই থাকে যে সেটি কোন ধরনের ত্বক বা চুলের জন্য উপযোগী। তবে তার আগে কোনো রূপবিশেষজ্ঞের কাছ থেকে নিজের ত্বক ও চুলের ধরন জেনে নেয়া ভালো। ত্বক সাধারণত চার রকমের হয়ে থাকে_ শুষ্ক, তৈলাক্ত, মিশ্র ও সংবেদনশীল। ফেসওয়াশ, সাবান, ময়েশ্চারাইজার, সানস্ক্রিন লোশন থেকে শুরু করে মুখে ব্যবহারের মেকআপ-সামগ্রীও বাছাই করতে হবে ত্বকের ধরন বুঝে। তৈলাক্ত ত্বক এমনিতেই অনেক বেশি ঘামে, এ ধরনের ত্বকের জন্য পানিনির্ভর প্রসাধনী ভালো। শুষ্ক ত্বকে আবার এটি ভালো কাজে দেবে না। তারা তেলনির্ভর প্রসাধনী বেছে নিতে পারেন।
সংবেদনশীল ত্বক যাদের, তাদের সবচেয়ে সাবধান হতে হবে। কোন কোন জিনিসগুলো ত্বকে সমস্যা করতে পারে, তা আগে জেনে নিয়ে সব সময় তা এড়িয়ে চলতে হবে। পণ্যের প্যাকেট থেকে সেটির উপাদানের নামগুলো কেনার আগেই দেখে নিন। অ্যালার্জি হতে পারে, এমন কোনো উপাদান এতে স্বল্পমাত্রায় থাকলেও তা ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন। একই নিয়ম মেনে চলতে হবে চুলের প্রসাধনী বাছাইয়ের ক্ষেত্রেও। রুক্ষ চুলের জন্য যেই শ্যাম্পু ভালো, তা রেশমি চুলের জন্য উপকারী না-ও হতে পারে। অনেক সময় প্রসাধনী ঠিকভাবে ব্যবহার না করতে পারার কারণেও নানা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। তাই জেনে নিতে হবে সঠিক ব্যবহারবিধি।
নতুন কোনো প্রসাধনী ত্বক ও চুলের সঙ্গে মানিয়ে যাবে কিনা, তা ব্যবহারের আগে জানার নিশ্চিত কোনো উপায় নেই। তাই আগেই বেশি পরিমাণে না কিনে বাজার থেকে সবচেয়ে ছোট কনটেইনারটি কিনে তা কিছু দিন ব্যবহার করে দেখার পরামর্শ দেন রাহিমা সুলতানা। মুখে লাগানোর পর যদি ফুসকুড়ির মতো দেখা দেয়, চুলকানি বা জ্বালাপোড়া হয়, তাহলে সেদিন থেকেই পণ্যটির ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। শ্যাম্পুর ক্ষেত্রে এটি বুঝতে দু-তিন দিন সময় নেয়া দরকার। চুল রুক্ষ হতে থাকলে, চুল পড়া বেড়ে গেলে বা খুশকি হলে সেই শ্যাম্পুও আর ব্যবহার করা উচিত হবে না। একই নিয়ম মেনে চলতে হবে ভেষজ প্যাক ব্যবহারের ক্ষেত্রেও। না বুঝেই মুখে ও চুলে কোনো প্যাক লাগিয়ে বিপদ ডেকে আনবেন না। ত্বক ও চুলের সঙ্গে মানিয়ে গেলে কেবল সেটা নিয়ম মেনে ব্যবহার করুন। মুখে লাগানোর আগে গলায় বা কানের পেছনে লাগিয়ে নিয়ে দেখতে পারেন ত্বকে কোনো জ্বালাপোড়া বা সমস্যা হচ্ছে কিনা। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া গুরুতর পর্যায় ধারণ করলে দেরি না করে অবশ্যই অভিজ্ঞ কোনো চর্মরোগ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া ভালো।

শুষ্ক ত্বকের যত্নে ঃ হিমেল হাওয়ার দিনগুলোতে কম-বেশি সবারই ত্বক শুষ্ক হয়ে পড়ে। অনেকেরই ত্বক ফেটে যায় এ সময়। তবে যাদের ত্বক এমনিতেই একটু শুষ্ক ও রুক্ষ প্রকৃতির, অন্যদের চেয়ে তাদের সমস্যা একটু বেশিই হয় এ সময়ে। শুষ্ক ত্বকের জন্য এ সময় তাই দরকার বাড়তি যত্ন।
শীতে কারো কারো ত্বক অতিরিক্ত ফেটে যায়। অতিরিক্ত ত্বক ফাটার সমস্যা হতে পারে জন্মগত কারণে। আবার কিছু রোগের কারণেও এমন হতে পারে। নিয়মিত ময়েশ্চারাইজার লাগানোর পরও অতিরিক্ত ত্বক ফাটলে বুঝতে হবে, কোনো সমস্যার কারণে এমন হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
নিয়মিত যত্ন নিলে শুষ্ক ত্বকও হয়ে উঠবে লাবণ্যময়। ত্বকের স্বাভাবিক আর্দ্রতা ফিরে পেতে তাই এখনই হোন সচেতন। জেনে নিন শুষ্ক ত্বকের যত্নে রূপবিশেষজ্ঞ তানিয়া রহমানের পরামর্শ_
দিনে দু-তিন বার অধিক ময়েশ্চারাইজারযুক্ত কোনো ক্রিম ব্যবহার করুন। অতিরিক্ত শুষ্ক ত্বকে বলিরেখা বেশি বোঝা যায় এবং অতিরিক্ত শুষ্কতার জন্য ত্বক তার স্বাভাবিক লাবণ্য হারায়। শুষ্কতা এড়াতে অবশ্যই ত্বকে নিয়মিত ময়েশ্চারাইজার লাগাতে হবে।
ত্বক পরিষ্কার রাখতে হবে সব সময়। যতবার মুখ ধোবেন ততবারই লাগাতে হবে ময়েশ্চারাইজার। রাতে কিছুটা হালকা ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে পারেন।
একটি ডিমের কুসুমের সঙ্গে বেশ খানিকটা দুধের সর, একটু মসুরের ডাল বাটা ও একটু মধু মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে ত্বকে লাগাতে পারেন। সপ্তাহে তিন দিন এ প্যাক ব্যবহারে ত্বকের অতিরিক্ত শুষ্ক ভাব কমে যাবে।
ত্বকের লাবণ্য ফিরিয়ে আনতে হারবাল ফেসিয়াল ছাড়াও বিভিন্ন বিউটি ফেসিয়াল করাতে পারেন।
শীতে পায়ের গোড়ালি ফাটার সমস্যাও বেড়ে যায়। যাদের ত্বক একটু রুক্ষ, তাদের গোড়ালি ফাটার সমস্যার সমাধানে তিনি দিয়েছেন আরো কিছু পরামর্শ_
নিয়মিত পায়ের গোড়ালি পরিষ্কার করুন।
গোড়ালির মৃতকোষ ঝামা দিয়ে ঘষে পরিষ্কার করে ফেলুন।
পায়ের গোড়ালি নরম রাখতে গি্লসারিন বা কিছুটা তৈলাক্ত কোনো লোশন লাগাতে পারেন।
রাতে গি্লসারিন বা লোশন লাগানোর পর পারলে মোজা পরে ঘুমান।

Read More Bangla News