যেভাবে করবেন রাইস ওয়াটার হেয়ার ট্রিটমেন্ট
চুলে জট লেগে থাকা এখন কমবেশি সবারই সমস্যা। ধুলোবালি, কেমিক্যালযুক্ত হেয়ার প্রোডাক্টস এর ব্যবহার আর অত্যধিক তাপ আমাদের চুলের অবস্থা তো তেজপাতা বানিয়েই ফেলে। ফলাফল = চুল আঁচড়াতে বসলেই দেখা যায় একগাদা চুল ছিঁড়ে যায়। চুলকে সফট অ্যান্ড শাইনি করার জন্য আমরা কত পার্লারে যাচ্ছি, ট্রিটমেন্ট করাচ্ছি। আবার হাজার হাজার টাকা খরচ করে কত রকমের প্রোডাক্টস কিনছি। কিন্তু আমরা কিন্তু অনেকেই জানি না চুলের যত্নের জন্য আমাদের সবার বাসাতেই খুব সহজলভ্য একটা উপাদান আছে, ইন ফ্যাক্ট সহজলভ্য বললেও কম হয়ে যাবে আসলে, সেটা হলো চাল! হ্যা, আমি ভাতের চালের কথাই বলছি। ভাবছেন চালের সাথে চুলের কি সম্পর্ক? আজকে আমি আপনাদের সাথে একদম সহজ একটা হেয়ার কেয়ার টেকনিক শেয়ার করতে যাচ্ছি যেটা আমি আমার নিজের চুলে করে থাকি। সেটা হল রাইস ওয়াটার ট্রিটমেন্ট!
চলুন তাহলে আর দেরি না করে দেখে নিই ফারমেন্টেটেড রাইস ওয়াটার ট্রিটমেন্টের জন্য আমাদের কী কী লাগছে।
দেড় কাপ চাল, ১ লিটার পানি
কি অবাক হলেন তো? ব্যস এই দুটো জিনিসেই আপনার কাজ হয়ে যাবে! আর কিচ্ছু লাগবে না!
এবার ঐ দেড় কাপ চাল একবার ধুয়ে নিন। তারপর একটা মাঝারি সাইজের গামলায় ঐ এক লিটার পানি নিয়ে তাতে চালটুকু ভিজিয়ে নিন।
এবার ভালো একটা ঢাকনা দিয়ে ঐ চালসহ পানিটুকু ঢেকে রেখে দিন, ২৪ ঘণ্টার জন্য। মাঝেমাঝে হাত দিয়ে চাল আর পানিটুকু নেড়েচেড়ে দিবেন। এখন এই ২৪ ঘণ্টায় ফার্মেন্টেশন ঘটবে, ফলে রাইস ওয়াটার টা কিছুটা অ্যাসিডিক হবে এবং এর pH লেভেল এমন লেভেলে যাবে যা আমাদের চুলের ন্যাচারাল pH লেভেলের ভারসাম্য ঠিক করে। সেই সাথে চালে থাকা ন্যাচারাল ভিটামিনস, মিনারেলস এবং অ্যান্টি অক্সিডেন্টস পানিটায় ধীরে ধীরে ইনফিউজড হতে থাকবে। এবার গোসলের সময় আপনার রেগুলার শ্যাম্পু দিয়ে শ্যাম্পু করে নিন।
তারপর ঐ রাইস ওয়াটারের গামলাটা থেকে ছাঁকনির সাহায্যে চালটা ছেঁকে নিন আর পানিটুকু আরেকটা গামলায় ঢেলে নিন। এবার ঐ রাইস ওয়াটারের গামলাটি পায়ের উপর রেখে মগের সাহায্যে আস্তে আস্তে আপনার মাথার স্ক্যাল্পসহ পুরো চুলে আস্তে আস্তে ঢালতে থাকুন। ঢালা শেষ হলে চুলের আগাটুকু ঐ রাইস ওয়াটারে ভিজিয়ে রাখুন, এতে করে চুলের আগাটুকু ডপ কন্ডিশনড হবে এবং আগা ফেটে যাওয়া চুলগুলো ও অনেকটাই ভদ্রস্থ দেখাবে। আধ ঘণ্টা পর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে চুল ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন এবং পুরোনো নরম টিশার্ট দিইয়ে আলতো হাতে চুল মুছে ফ্যানের বাতাসে শুকিয়ে নিন ।
এই ফারমেন্টটেড রাইস ওয়াটার হেয়ার ফলিকলগুলোকে ডিপলি নারিশ করে, হেয়ারফল কমায়, চুলে জট বাঁধতে দেয় না এবং স্কাল্পকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি জুগিয়ে চুলকে করে তোলে হেলদি, সফট, শাইনি আর গর্জিয়াস!
একটানা কমপক্ষে দুই মাস, সপ্তাহে দুই থেকে তিনদিন এই ফারমেন্টেড রাইস ওয়াটার চুলে ব্যবহার করেই দেখুন । তফাৎটা নিজের চোখেই দেখতে পাবেন ।