বাংলার জনপ্রিয় ধারাবাহিকের হিন্দি ভার্সন
একটা সময় ছিল, যখন হিন্দিতে কোনও ধারাবাহিক সফল হলে, তার বঙ্গীয়-সংস্করণ বানানো হতো। কিন্তু সময় বদলেছে!
এখন বাংলার জনপ্রিয় ধারাবাহিকের হিন্দি-ভার্সন বানানো হচ্ছে। হালের উদাহরণই ধরা যাক। ‘পটলকুমার গানওয়ালা’র হিন্দি রিমেক ‘কুলফি কুমার বাজেওয়ালা’র শ্যুটিং প্রায় শুরুর পথে। ট্রেন্ডটা অনেকদিনেরই। বাংলা থেকে হিন্দিতে রিমেক হওয়া কিছু জনপ্রিয় ধারাবাহিকের উদাহরণ দিল ‘ওবেলা’।
পটলের বাবা ইন্ডাস্ট্রির প্রতিষ্ঠিত সংগীত শিল্পী। কিন্তু ছোটবেলা থেকেই সে, স্ত্রী-সন্তানকে ছেড়ে আলাদা থাকে। অন্যদিকে, বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পটলেরও সংগীত প্রতিভা বিকাশ পায়। চিত্রনাট্যে এক মোড়ে পটল মাতৃহারা হয়। এরপর শুরু হয় পটলের একা পথচলা। পটল চায়, তার হারিয়ে যাওয়া বাবাকে খুঁজে পেতে। সে নিজের মতো করে বাবার খোঁজও শুরু করে। ‘স্টার জলসা’য় সম্প্রচার শুরু হতেই জনপ্রিয়তা পেয়েছিল ‘পটলকুমার গানওয়ালা’। সেই জনপ্রিয়তার কথা মাথায় রেখে সম্প্রতি ধারাবাহিকের হিন্দি সংস্করণ তৈরির কথা ভেবেছে চ্যানেল কর্তৃপক্ষ। হিন্দি ধারাবাহিকের নাম রাখা হচ্ছে ‘কুলফি কুমার বাজেওয়ালা’। তবে কে বা কারা সেই ধারাবাহিকে অভিনয় করবেন, তা এখনও জানা যাচ্ছে না। খবর, খুব তাড়াতা়ড়িই শুরু হবে নতুন ধারাবাহিকের শ্যুটিং।
এক ছোট্ট, মিষ্টি ভূতের গল্প দেখানো হয়েছিল এই ধারাবাহিকে। সকলের সঙ্গে মিলেমিশে থাকতে চায় সাত বছরের ভুতু। ধারাবাহিকের চিত্রনাট্যে বৈচিত্র এনেছিলেন নির্মাতারা। ২০১৬ সালের ১৪ মার্চ ‘জি বাংলা’য় শুরু হয়েছিল ধারাবাহিক। ‘ভুতু’র টিআরপি বেড়েছিল চড়চড়িয়ে। ধারবাহিকের সাফল্য দেখে ‘ভুতু’র হিন্দি ডাব্ড ভার্সন ‘জি আনমোল’এ সম্প্রচার শুরু হয়। তবে শুধু তাই নয়, হিন্দিতেও রিমেক হয় বাংলার এই জনপ্রিয় ধারাবাহিকের। জনপ্রিয়তা ধরে রাখতে, নামও অপরিবর্তিত রাখা হয়। এমনকী, নামভূমিকায় অভিনয় করার জন্য ডাক পড়েছিল বাংলার আর্শিয়া মুখোপাধ্যায়েরই। প্রসঙ্গত, কন্নড় ভাষাতেও রিমেক করা হয়েছে ‘ভুতু’। ‘জি কন্নড়’এ সম্প্রচারিত ধারাবাহিকের নাম ‘অঞ্জলি দ্য ফ্রেন্ডলি ঘোস্ট’।
রবি ঘোষ অভিনীত ‘গল্প হলেও সত্যি’র আদলেই এই ধারাবাহিকের চিত্রনাট্য লিখেছিলেন ‘ভজ গোবিন্দ’র নির্মাতারা। চৌধুরী বাড়ির বিগড়ে যাওয়া মেয়েকে ভজ কীভাবে সুপথে ফেরায়, সেই গল্প নিয়েই এগিয়ে চলে ধারাবাহিক। ‘ভজ গোবিন্দ’র জনপ্রিয়তা দেখে ধারাবাহিকটির হিন্দি রিমেকের কথা মাথায় আসে নির্মাতাদের। বাংলা সংস্করণের সঙ্গে মিলিয়েই নাম রাখা হয় ‘জয় কানহাইয়া লাল কী’। আপাতত ‘স্টার ভারত’ চ্যানেলে রমরমিয়ে চলছে। হিন্দি ধারাবাহিক হলেও, তার শ্যুটিং কিন্তু হয় কলকাতাতেই। মুম্বইয়ের অভিনেতারা কলকাতায় এসে ধারাবাহিকের শ্যুটিং করে যান। এমন উদাহরণ টেলিভিশনের ইতিহাসে বিরল! ধারাবাহিকের ফিমেল-প্রোটাগনিস্ট শ্বেতা ভট্টাচার্য। তাঁর বিপরীতে রয়েছেন মুম্বইয়ের বিশাল বশিষ্ঠ। এছাড়াও ধারাবাহিকে রয়েছেন দীপঙ্কর দে, রূপাঞ্জনা মৈত্র, রাজদীপ গুপ্ত প্রমুখ।
যে সব রহস্যের সমাধানে নেমে পুলিশ-প্রশাসনেরও নাকাল অবস্থা, সেই সব রহস্য নিরসন করা তার বাঁ-হাতের খেল। তিনি পারমিতা মিত্র। ‘জি বাংলা’র জনপ্রিয় ধারাবাহিকে গোয়েন্দা গিন্নি, ওরফে পারমিতা মিত্র সেজেছিলেন ইন্দ্রাণী হালদার। গল্পের বুনন ছকভাঙা! তাই সম্প্রচার শুরু হতেই ধারাবাহিকের টিআরপি চড়েছিল তরতরিয়ে। ২০১৬ সালের ২৫ ডিসেম্বর এই ধারাবাহিকের শেষ পর্ব সম্প্রচার করা হয় চ্যানেলে। তার ঠিক এক বছর পর, ২০১৭’র ডিসেম্বর থেকে ‘জি টিভি’তে শুরু হয় নতুন হিন্দি ধারাবাহিক ‘ডিটেকটিভ দিদি’। গল্পের প্লট প্রায় এক। তবে ‘ডিটেকটিভ দিদি’ই যে ‘গোয়েন্দা গিন্নি’র হিন্দি সংস্করণ এই অভিযোগ মানতে চায়নি চ্যানেল কর্তৃপক্ষ। কেন? এই উত্তর অবশ্য মেলে না। প্রসঙ্গত, ‘গোয়েন্দা গিন্নি’র তেলুগু সংস্করণও বানানো হয়েছিল। শোনা যায়, বাংলা ভার্সনের সঙ্গে তেলুগু ভার্সনের মিল ছিল চোখে পড়ার মতো।
বাংলার এক তফশিলি সম্প্রদায়ের মেয়ে বাহামণি। বাংলা ধারাবাহিক ‘ইষ্টি কুটুম’এর মুখ্যচরিত্রে অভিনয় করেছিলেন রণিতা দাস। চিত্রনাট্যের নানা মোড় ঘুরে কলকাতায় এসে পৌঁছয় বাহামণি। তারপর শুরু হয় তার জীবন যুদ্ধের পালা। সঙ্গে চলতে থাকে নিজের স্বপ্নপূরণ এবং অস্তিত্বরক্ষার লড়াই। লীনা গঙ্গোপাধ্যায়ের লেখা ‘ইষ্টি কুটুম’এর গল্প মন ছুঁয়ে গিয়েছিল বাঙালি দর্শকের। ২০১৫’র ডিসেম্বরে ‘স্টার জলসা’য় শেষ হয়েছিল এই ধারাবাহিক। বলা বাহুল্য, ধারাবাহিক শেষ হওয়ার আগেই ‘ইষ্টি কুটুম’এর হিন্দি সংস্করণ বাজারে এনেছিল চ্যানেল কর্তৃপক্ষ। ২০১৫’র অগস্ট থেকেই ‘স্টার প্লাস’এ শুরু হয়েছিল ‘মোহি’। বেশ ভালই জনপ্রিয়তা পেয়েছিল এই নতুন ধারাবাহিক।
খবর - এবেলা