প্রতিদিন সকালে পরিষ্কার সুন্দর ত্বক পেতে কে না চায়? সারাদিন আমাদের ত্বকে অনেক ময়লা জমে, যা ত্বককে অনেক রুক্ষ ও নোংরা করে ফেলে। এতে ত্বকের লাবণ্য ভাব চলে যায় ও ত্বক দেখায় কালো। এর ফলে ত্বকে বলিরেখা, ব্রণ, সানবার্ণ ও চোখের নিচে কালি পড়তেও দেখা যায়। এভাবে নিয়মিত চলতে থাকলে কিছুদিন পর ত্বক কুচকে একটা বয়স্কভাব চলে আসে। আবার ত্বক ভালোভাবে পরিষ্কার না করে ঘুমালে সকালে উঠে ত্বক কেমন যেন মলিন লাগে। তাই সারাদিনের কাজের পর দরকার ত্বকের যত্ন। এক্ষেত্রে অবশ্যই রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে নাইট ক্রিম ব্যবহারের বিকল্প নেই। এটি হচ্ছে এমন এক জিনিস যেটি সারারাত ত্বককে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে। একইসঙ্গে ত্বকে প্রয়োজনীয় ভিটামিনের জোগান দিয়ে ত্বককে রাখে কোমল ও উজ্জ্বল। আবার সারাদিনের ক্লান্তি দূর করতেও ভূমিকা রাখে নাইট ক্রিম।

নাইট ক্রিমের রয়েছে আরও নানা উপকারিতা-
কোষের বৃদ্ধি ঘটায় নাইট ক্রিমে কলেজিন, ভিটামিন এবং অ্যামিনো এসিড রয়েছে, যা সারা রাত ত্বকের কোষের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ঘটাতে সাহায্য করে। ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায় তৈলাক্ত, শুষ্ক ও স্বাভাবিক ত্বকের জন্য রয়েছে আলাদা আলাদা নাইট ক্রিম। ত্বকের ধরণ অনুযায়ী সঠিক নাইট ক্রিম ব্যবহার করে ঘুমাতে গেলে দেখবেন নিয়মিত ব্যবহারে আপনার ত্বক হবে উঠবে আরো কোমল, নরম ও উজ্জল। একইসঙ্গে ব্রণের উপদ্রব থেকে মুক্তি মিলবে। সহজে বয়সের ছাপ পড়েনা নিয়মিত নাইট ক্রিম ব্যবহারে ত্বকে বয়সের ছাপ পড়বে না। শুধু তাই নয়, এর ফলে বলিরেখাও হবে না। এটা ত্বকের তারুণ্য ধরে রেখতে সাহায্য করে।

ত্বকের ধরণ অনুযায়ী নাইট ক্রিম
বাজারে সব ধরণের ত্বক ও বয়সের নাইট ক্রিম রয়েছে। এক্ষেত্রে সঠিক নাইট ক্রিম কিনতে কিছু বিষয় জানা জরুরি- ১। নিজের বয়স, ২। ত্বকের ধরণ (স্বাভাবিক, শুষ্ক, তৈলাক্ত) ৩। আপনার ত্বকের কি প্রয়োজন (ভিটামিন সি, ভিটামিন ই, ভিটামিন এ) ৪। কি কি উপাদানে তৈরি। ৫। কেমন দাম (যে কোন ভাল ব্রান্ডের নাইট ক্রিমের অনেক দাম হয়। বিশেষ করে যে কোন ডে ক্রিমের তুলনায় নাইট ক্রিমের দাম বেশি। তাই আসল নকল দেখে নিন)

প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি নাইট ক্রিম –
ত্বক ফর্সা করতে প্রাকৃতিক উপাদানের জুড়ি নেই। ত্বকের অনাকাঙ্ক্ষিত কালো দাগ, হারিয়ে যাওয়া উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনাসহ দীপ্তিময় মসৃণ ত্বকের জন্য প্রাকৃতিক নাইট ক্রিম হতে পারে একমাত্র ভরসা। এবার জেনে নিন ঘরোয়া উপায়ে কিভাবে বানাবেন এই নাইট ক্রিম-

যা যা লাগবে –
১/ একটা তাজা আপেল, ২/ আধা কাপ জলপাই তেল, ৩/ আধা কাপ গোলাপ জল।

যেভাবে করবেন –
আপেলের বীজ এবং ভেতরের অংশ বাদে বাকি অংশটি কুচি করে কাটুন। এবার গোলাপ জল ও অলিভ অয়েল মিশিয়ে ব্লেন্ডারে দিয়ে মিহি করে নিন, যাতে ঘন একটা পেস্টের মত হয়। একটা বড় পাত্রে পানি গরম করে ফুটাতে থাকুন। পানির মধ্যে আরেকটি পাত্রে রেখে এই মিশ্রণটি ঘন হওয়া পর্যন্ত নাড়তে থাকুন। ঘন হয়ে আসলে নামিয়ে ঠাণ্ডা করুন। একটা পরিষ্কার কৌটায় ভরে ফ্রিজে সংরক্ষণ করতে পারেন দীর্ঘদিন।

উপকারিতা –
কাঁচা আপেলে ম্যালিক অ্যাসিড থাকে, যা ত্বককে কোমল এবং টানটান করে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের বুড়িয়ে যাওয়া কমায়। – জলপাই তেল ময়েশচারাইজারের কাজ করে। খুব শুষ্ক ত্বককেও সজীব করে তোলে। ত্বকের ক্ষতি মেরামত ত্বরান্বিত করে। – গোলাপ জল টোনারের কাজ করে। সারাদিন ত্বকে জমে থাকা ময়লা দূর করে। ত্বকের রোমকূপ খুলে দেয়। ত্বকের অনাকাঙ্ক্ষিত দাগসহ রোদে পোড়া ভাব কমায়।

সতর্কতা –
সুন্দর ত্বকের জন্য অবশ্যই অবহেলা না করে নাইট ক্রিম ব্যবহার করুন। এক্ষেত্রে নিজের ত্বকের জন্য সঠিক ক্রিমটিই পছন্দ করুন। কম দামে ফর্সা হওয়ার গ্যারান্টি দেওয়া ক্রিমগুলো কখনই ব্যবহার করবেন না। এগুলো সাময়িকভাবে ত্বক ফর্সা করলেও ত্বক ক্ষতি করে। এর ফলে পরবর্তীতে ত্বকের ক্যান্সার পর্যন্ত হতে পারে। সব সময় ভাল কোম্পানীর জিনিস কিনুন। দাম একটু বেশি হলেও আপনার ত্বকের কোন ক্ষতি করবে না। মনে রাখবেন, ভালো কোম্পানির ক্রিমগুলো কখনই আপনাকে ফর্সা হওয়ার গ্যারান্টি দেবে না। কারণ এগুলো আসল এবং উন্নতমানের উপকরণে তৈরি।