বকুল কথা
পরনে ট্র্যাকশ্যুট আর গেঞ্জি। বয়কাট চুল। হাবভাবও ছেলেসুলভ। পাড়ার রক থেকে পুকুর পাড়ে তার আড্ডা। মানুষের আপদে বিপদে ঝাঁপিয়ে পড়তে দ্বিধা করে না। রাত বিরেতেও বকুল হাজির তার দল নিয়ে। এহেন মুশকিল আসানকে পাড়ায় সবাই ডাকে বকুলদা। বাড়িতে মা- বৃদ্ধা ঠাকুরমার ওষুধ নেই, পাড়ায় কেউ অসুস্থ সকলেরই ভরসা সেই বকুল। পাড়ার অনুষ্ঠানের আলোর ফিউজ উড়ে গেলেও ডাক পড়ে বকুলের। দিদিকে গুন্ডার হাত থেকে বাঁচাতে আসরে নেমে পড়ে সে। এহেন বকুল আসলে সান্যাল বাড়ির ছোট মেয়ে হয়েও ছেলের মতোই সকলের মুশকিল আসান।
বকুলের বাবা- মা অমিতাভ ও লাজবন্তীর ইচ্ছে ছিল বড় মেয়ের পর আসুক এক ছেলে। কিন্তু বিধি বাম। দ্বিতীয় সন্তান হল মেয়ে। ছেলের অভাব পূরণ করতেই মেয়ে হয়েও দায়-দায়িত্ব পালনে কোনও অংশে কম যায় না বকুল। অকালে বাবা মারা যাওয়ায় আরও বেশি করে সংসারে জড়িয়ে পড়ে সে। অন্যদিকে শহরের ধনী ব্যবসায়ী শেখর রায়ের ছোট ছেলে ঋষির বিয়ের কথা চলছে। সে খুব খুঁতখুঁতে। বহু পাত্রীকে বাতিল করেছে। তার পরিবার বিশ্বাস করে বিয়ের ক্ষেত্রে জন্মছক গুরুত্বপূর্ণ। বর্ষার সঙ্গে বিয়ের কথা হয় ঋষির। এই বিয়েতে বর্ষা রাজি নয়। সে ভালোবাসে অন্য একজনকে। বর্ষা প্ল্যান করে বিয়ে ভাঙার জন্য বকুলের ছক পাঠায় যাতে কোনওভাবে ছক না মেলে। অথচ ভাগ্যের ফেরে সেই ছক মিলে যায়। ঋষির সঙ্গে তাহলে কার বিয়ে হবে? বকুল না বর্ষার? আপাতত এই নিয়েই এগিয়ে চলেছে কাহিনী।
টমবয় লুক বা ছেলেদের টোনে কথা বলা, পোশাক-হাবভাবে সাবলীল ধারাবাহিকের বকুল। আরও একটি ব্যাপার যেটি এই ধারাবাহিকে চোখে পড়ে একটা বস্তাপচা ধারণাকে ভাঙার চেষ্টা। আজও আমাদের সমাজে অনেকে মনে করেন একটা ছেলে যা পারে, একটা মেয়ে তা পারে না। ছক বাঁধা ধারণাকে আমূল বদলে দিতে বদ্ধপরিকার ‘বকুল কথা’। নায়কের পাশে মিষ্টি বউ নয়, সে গোটা পাড়ার হিরো। বকুলের ভূমিকায় ঊষসী রায়। আগের ধারাবাহিক মিলন তিথির ঘরোয়া লক্ষ্মীমন্ত বউ থেকে একেবারে বিপরীত ধাঁচের চরিত্রে জমিয়ে দিয়েছেন তিনি। বকুলের দিদির চরিত্রে দেখা যাচ্ছে উপমিতাকে। মায়ের চরিত্রে সোহিনী সান্যাল ও ঠাকুরমার চরিত্রে অনুরাধা রায়। ঋষির চরিত্রে আছেন হানি বাফনা।