শীতে চুল রাখুন খুশকি মুক্ত
শীতকালে চুলে খুশকির উপদ্রব বেড়ে যায় অনেকাংশে। শুষ্ক বাতাস ও রুক্ষ আবহাওয়া মাথার ত্বকের ওপর প্রভাব ফেলে অনেকখানি। বাতাসের সাথে ধুলোবালি পুরোটাই চুলে এসে পড়ে। মাথার ত্বকের তৈলাক্ততায় এই ধুলোবালি আটকে গিয়ে খুশকির উপদ্রব বাড়িয়ে ফেলে বহুগুন। আবার শীতকালে যখন গরম পানিতে গোসল করা হয়, তখন গরম পানি মাথার ত্বককে শুষ্ক করে ফেলে ফলে সৃষ্টি হয় খুশকি। নামিদামী অনেক শ্যাম্পু ও অন্যান্য চুলের প্রসাধন ব্যবহার করেও এই যন্ত্রণাদায়ক খুশকির উপদ্রব থেকে মুক্ত হওয়া যায় না সহজে। আবার খুশকি দূর করতে গিয়ে এই এসব রাসায়নিক প্রসাধন রুক্ষ করে ফেলে চুলকে। আমরা অনেকেই জানি না এই খুশকির উপদ্রব থেকে বাঁচার ব্যবস্থা রয়েছে আমাদের ঘরেই। জেনে নিন ঘরোয়া পদ্ধতিতে ও সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে চুলকে খুশকি মুক্ত করার ৩টি উপায়।
ডিম ও লেবুর রসের ব্যবহার
খুশকির উপদ্রব দূর করতে খুবই কার্যকরী ও সহজ একটি পদ্ধতি হচ্ছে লেবুর রসের ব্যবহার। লেবুর রসের সাইট্রিক অ্যাসিড মাথার ত্বক থেকে খুশকি দূর করে। এবং ডিমের প্রোটিন চুলকে ভেতর থেকে স্বাস্থ্যউজ্জ্বল করে ও পুনরায় খুশকির আক্রমণ থেকে রক্ষা করে।
পদ্ধতিঃ
প্রথমে একটি বাটিতে চুলের ঘনত্ব ও লম্বা অনুযায়ী ১ টি বা ২ টি ডিমের সাদা অংশ নিয়ে ফেটিয়ে নিন। পরে এর মধ্যে একটি গোটা লেবুর রস চিপে ভালো করে মিশিয়ে নিন। মনে রাখবেন এই পদ্ধতিতে অবশ্যই তাজা লেবু ব্যবহার করতে হবে। এরপর মিশ্রণটি ভালো ভাবে পুরো চুলে লাগিয়ে নেবেন। মাথার ত্বকে ভালো করে লাগাবেন। ৫ মিনিট পরে ঠাণ্ডা পানি ও মৃদু কোন শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ২/৩ বার ব্যবহারে খুশকির হাত থেকে রেহাই পাবেন।
নিম পাতার ঔষুধি গুণ
নিম পাতায় রয়েছে অ্যান্টিফাঙ্গাল উপাদান। যা মাথার ত্বক থেকে শুধুমাত্র খুশকিই দূর করে না সাথে মাথা ত্বকের ফুসকুড়ি ও অন্যান্য রোগ থেকেও মুক্তি দেয়। নিয়মিত ব্যবহারে আপনার চুল খুশকিমুক্ত ও সুন্দর থাকবে।
পদ্ধতিঃ
সাধারণত যারা অল্প ও সাময়িক খুশকির সমস্যায় ভুগছেন তারা ১০-১৫ টি নিম পাতা ৫/৬ কাপ ফুটন্ত গরম পানিতে সারারাত ভিজিয়ে রাখুন। সকালে সেই পানি দিয়ে চুল ধুয়ে ফেললে খুশকি দূর হবে সহজেই। আর যারা দীর্ঘসময় ধরে এই খুশকির উপদ্রব সহ্য করে যাচ্ছেন, তারা প্রথমে নিম পাতা ভালো করে ধুয়ে বেটে নিন। এরপর ৩০ মিনিট মাথার ত্বকে লাগিয়ে রেখে ভালো করে চুল ধুয়ে নিন। এই নিম পাতা বাটা নিয়ম করে মাথার ত্বকে লাগাবেন প্রতিদিন। এতে করে কয়েকদিনের মাঝেই দীর্ঘস্থায়ী খুশকির যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাবেন।
তেলের ব্যবহারে দূর করুন খুশকি
অনেকেই অবাক হতে পারেন তেল ব্যবহার করার কথা শুনে। কারন সবাই জানেন তেল চিটচিটে থাকলে চুলে খুশকির উপদ্রব আরও বেড়ে যায়। কিন্তু এটা ভুলবেন না যে মাথার ত্বক একেবারে শুষ্ক হয়ে গেলেও খুশকি দেখা দেয়। তেল ব্যবহার করবেন কিন্তু তেল দিয়ে বাইরে বের হবেন না বা বেশি সময় চুলে তেল রাখবেন না। বিশেষ করে এই শীতকালে। তেল আপনার মাথার ত্বককে শুষ্কতার হাত থেকে বাঁচায় ও খুশকি মুক্ত করে।
পদ্ধতিঃ
চুলকে খুশকি মুক্ত রাখতে চাইলে আপনার লাগবে দু ধরণের তেল। জলপাই তেল (অলিভ অয়েল) এবং বাদামের তেল (আলমন্ড অয়েল) একসাথে মিশিয়ে নেবেন। চাইলে বোতলে একসাথে জলপাই তেল এবং বাদামের তেল মিশিয়ে রেখে দিতে পারেন। দুই তেলের এই মিশ্রণটি চুলে খুব ভালো ভাবে লাগাবেন। বিশেষ করে চুলের গোড়ায়, মাথার ত্বকে। প্রায় চুপচুপে করেই লাগাবেন। যদি মাথার ত্বক চিড়বিড় করে কিংবা জ্বলুনি শুরু হয় তবে ভয় পাবেন না। একটু জ্বলুনি হবে। শুধুমাত্র ৫ মিনিট এভাবে রেখে চুল ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ২/৩ বার ব্যবহার করুন যতদিন না চুল থেকে খুশকি দূর হচ্ছে।