সাজগোজ এ অনেকেরই সমস্যা শোনা যায় মুখের ফাউন্ডেশনের শেড মিলে না, মেক-আপ দিলে কালো লাগে, কন্সিলারের কালার কিভাবে নির্বাচন করবো। যারা নতুন মেক-আপ করছে, তাদের মেক-আপ সম্পর্কে খুঁটিনাটি বেসিক কিছু জিনিস না জানলেই নয়। যেমন কোন ধরনের ত্বকের জন্য কি রকম ফাউন্ডেশন, ত্বকের কোথায় কন্টরিং করবেন, ব্লাস দিবেন, কিভাবে ফাউন্ডেশন ব্লেন্ড করবেন, মেক-আপ না ঘামার জন্য করনীয় ইত্যাদি।
ফাউন্ডেশন দেয়ার আগে করনীয়ঃ
প্রথমেই বলে নেই এক এক জনের ত্বকের ধরন, রঙ এক এক রকম। কারো ত্বক ফর্সা, শ্যামলা আবার কারো ত্বক তৈলাক্ত, কারো ত্বক সেন্সসেটিভ। ফাউন্ডেশনের শেড মিলানো একটু কষ্ট সাধ্য ব্যাপারই বটে। যে দোকান থেকে কিনবেন সেখান থেকে ফাউন্ডেশন টেস্টার দিয়ে ত্বকে লাগিয়ে ম্যাচ করে নিবেন। হাতের নিচের সাদা অংশ যেখানে রোদ যায় না, সে অংশের সাথে ফাউন্ডেশনের কালার মিলিয়ে কিনবেন। তাছাড়া যদি আপনার শেড বাছাইয়ে ভুল হয়, যদি ত্বকের থেকে বেশি লাইট অথবা ডিপ কিনে ফেলেন তাহলে, লাইটের জন্য এক শেড ডিপ অথবা ডিপের জন্য এক শেড লাইট শেড কিনে ২ টা ফাউন্ডেশন একসাথে মিশিয়ে ব্যবহার করবেন। এতে করে পারফেক্ট রঙ টা আসবে।
তৈলাক্ত ত্বকঃ এই ত্বকের প্রধান সমস্যা মেক-আপ দেয়ার পর ত্বক অনেক ঘামে এবং মেক-আপ কালো হয়ে যায়। এর জন্য প্রথম যেটা করতে হবে মেক-আপ দেয়ার আগে মুখ ভালো করে স্ক্রাবিং করে, ৩/৪ টা বরফ কুচি পুরো মুখে লাগাতে হবে। এতে করে লোমকূপ বন্ধ হয়ে যাবে। তারপর মুখে আস্ট্রিঞ্জেন্ট টোনার লাগিয়ে, অয়েল ফ্রি ক্রিম লাগাতে হবে। মুখের বেস অবশ্যই প্রাইমার দিয়ে শুরু করতে হবে, এতে করে মেক-আপ কালো হবে না, অনেকক্ষণ মেক-আপ থাকবে। যদি প্রাইমার না থাকে তাহলে মিল্ক অফ মেগ্নেসিয়া মুখে হালকা একটু নিয়ে দিতে পারেন। তারপর মেক-আপ শুরু করে দিন। ভারী মেক-আপ হলে অন্তত মেক-আপ করার সময় ৪/৫ বার পানির ঝাপটা অথবা স্প্রে করবেন। তারপর স্পঞ্জ দিয়ে মুখের অতিরিক্ত মেক-আপ সরিয়ে ফেলবেন। তাছাড়া সেটিং স্প্রে কিনে নিতে পারেন। পানির মতই ব্যবহার করবেন। মেক-আপ অনেকক্ষণ থাকবে। ফাউন্ডেশন অবশ্যই অয়েল ফ্রি হতে হবে। এ ক্ষেত্রে মস ক্রিম ফাউন্ডেশন ও ব্যবহার করতে পারেন।
নরমাল ত্বকঃ
নরমাল ত্বক যাদের তাদের “টি” জোন মেক-আপ দিলে অনেক ঘামে। তারা মেক-আপের আগে ৩/৪ টা বরফ কুচি দিয়ে ভালো করে “টি” জোনে লাগাবেন। এবং মেক-আপের আগে প্রাইমার লাগাবেন। যাদের প্রাইমার নেই, তারা অয়েল ফ্রি বি বি ক্রিম লাগাতে পারেন। প্রাইমারের কাজ করবে। নরমাল ত্বকে-ও ফাউন্ডেশন অয়েল ফ্রি হতে হবে।
শুষ্ক ত্বকঃ
যেহেতু শুষ্ক ত্বকে মরা কোষ বেশি দেখা দেয়, তাই মেক-আপ করার আগে ভালো করে মুখ স্ক্রাব করতে হবে। যেকোনো ফলের তৈরি স্ক্রাব অথবা চালের গুঁড়ো, মধু, চিনি দিয়ে স্ক্রাব বানিয়ে ছোট ছেলেমেয়েদের ব্রাশ দিয়ে মুখে ঘড়ির কাটার উলটো দিকের পরশনে পুরো মুখ ভালো ভাবে স্ক্রাবিং করুন। এতে করে মুখের সব মরা কোষ উঠে যাবে। ব্ল্যাকহেডস দূর হবে। তারপর ক্রিম যুক্ত যেকোনো ফেস ওয়াশ দিয়ে মুখ ভালো করে ধুয়ে ফেলুন। এবার একটু বরফ কুচি নিয়ে মুখের টি জ়োনে ৫ মিনিট ঘষুন। মুখে টোনার লাগিয়ে ফেলুন। এরপর নিজের ত্বকে স্যুট করে এমন কোন ক্রিম লাগিয়ে ফেলুন। শুষ্ক ত্বকের ফাউন্ডেশন এবং প্রাইমার অয়েল বেস হতে হবে।
ফাউন্ডেশন দেয়ার নিয়মঃ
স্টেপ ১ – প্রথমে একটি প্রাইমার নিতে হবে।
স্টেপ ২ – পরিষ্কার মুখে প্রাইমার লাগাতে হবে ভালো ভাবে।
স্টেপ ৩ – হাতে ফাউন্ডেশন নিয়ে প্রথমে গালে, কপালে, নাকে লাগাতে হবে।


স্টেপ ৪ – তারপর একটি ব্রাশ নিয়ে ভালো ভাবে ফাউন্ডেশন ব্লেন্ড করতে হবে। মনে রাখতে হবে ব্লেন্ডিং হল প্রধান। যত বেশি ব্লেন্ড করবেন, তত ন্যাচারাল, ফুল কভারেজ মেক-আপ হবে। মেক-আপে কেকি ভাবটা আসবে না।
স্টেপ ৫ – তারপর কন্সিলার নিয়ে চোখের নিচে, মুখের কালো স্পটে লাগাতে হবে।


স্টেপ ৬ – এবার ফাউন্ডেশন ব্রাশ দিয়ে ভালো ভাবে কন্সিলার ব্লেন্ড করুন।
স্টেপ ৭ – একটা স্পঞ্জ দিয়ে আবার মেক-আপ ব্লেন্ড করুন। এতে করে ভালো ব্লেন্ড হওয়ার সা্থে সাথে আলগা মেক-আপ উঠে আসবে।
স্টেপ ৮ – তারপর যেকোনো ফেস পাওডার নিয়ে পুরো মুখে স্পঞ্জ দিয়ে পাওডার দিয়ে মুখের বেসকে সেট করুন।


স্টেপ ৯ – একটা বাফার অথবা প্লাফি ব্রাশ দিয়ে পুরো মুখের মেক-আপ কে ভালো করে ব্লেন্ড করুন।
স্টেপ ১০- ফাউন্ডেশন বেস এর ফাইনাল লুক।