বিয়ের দিনটার গুরুত্ব আপনার কাছে অবশ্যই অনেক বেশি। তাই ওইদিন সাজ নিয়ে খুব খুঁতখুঁতে হবেন আপনি। ওইদিন সাজটা হতে হবে জীবনের সব থেকে ভালো সাজ। যাতে সবার চোখ আটকে যায় আপনার দিকে। তাই আজ দিচ্ছি ফুল মেকআপ টিপস। কিভাবে পর পর স্টেপ অনুযায়ী করবেন পারফেক্ট মেকআপ। জেনে নিন।

মুখ পরিষ্কার
যে কোনো মেকআপ করার আগেই মুখ পরিষ্কার করে নেওয়া দরকার। তাই এক্ষেত্রেও সেটা করতে হবে। ফেসওয়াশ বা শুধু জল দিয়েও মুখ ধুয়ে নেওয়া যেতে পারে।

বেস মেকআপঃ
বেস মেকআপ খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। মুখের বেস মেকআপটা ঠিকমতো না হলে পুরো সাজটাই মাটি। কনের ন্যাচারাল যা স্কিন টোন তার থেকে ১বা ২শেড ওপরে হবে। আর মুখের সাথে যেন গলা,ঘাড়, পিঠের খুব পার্থক্য না থাকে। হাত পায়ের দিকেও খেয়াল রাখতে হবে।মুখের সঙ্গে শরীরের বাকি অংশগুলোর খুব বেশি পার্থক্য থাকলে,দেখতে ভালো লাগবে না। তাই হাত ও পিঠের স্কিন টোনের সাথে মানানসই এমন মেকআপ করতে হবে।

কন্সিলারঃ
ফাউণ্ডেশন লাগাবার আগে কন্সিলার লাগিয়ে নিতে হবে। কন্সিলার মুখের অন্যান্য দাগ,চোখের তলায় কালি থাকলে সেটা ঢেকে দেবে। তাই ওইদিন অবশ্যই কন্সিলার লাগাতেই হবে। আর নিজের স্কিন টোনের থেকে ১বা২শেড হালকা কন্সিলার বেঁছে নিতে হবে।কন্সিলার দিয়ে চোখের তলার কালো ভাব,মুখের অন্যান্য দাগ ঢাকার পর, লাগাতে হবে প্রাইমার। প্রাইমার মেকআপকে অনেকক্ষণ ঠিক রাখতে সাহায্য করে। আর কনের মুখে মেকআপকে অনেকক্ষণ ধরে রাখাও দরকার। তাই ফাউণ্ডেশন লাগাবার আগে মেকআপ প্রাইমার লাগাতে হবে।

ফাউণ্ডেশনঃ
এর পর ফাউণ্ডেশন।ফাউণ্ডশনের সাথে অল্প জল মিশিয়ে পুরো মুখটা কভার করতে হবে। নাকটাকে সুন্দর দেখাবার জন্য একটু গাঢ় ফাউণ্ডেশন নাকের দুপাশে লম্বা করে লাগিয়ে নিতে হবে। যাদের নাক একটু বসা,তাদের নাকটা সুন্দর লাগবে এতে। এছাড়াও গাল ও কপালে ভালো করে লাগাতে হবে। মেকআপ স্পঞ্জ দিয়ে লাগাতে হবে। এতে মুখের সবদিকে ভালোভাবে ছড়িয়ে যাবে। স্পঞ্জের সাহায্যে ফাউণ্ডেশন লাগিয়ে নিয়ে, এরপর মেকআপ ব্রাশ দিয়ে আরও ভালো করে ফাউণ্ডেশন ছড়িয়ে দিন।

কমপ্যাক্টঃ
ফাউণ্ডেশনকে আরও পারফেক্ট করে তোলার জন্য এরপর লাগাতে হবে কমপ্যাক্ট বা লুজ পাওডার। পাউডারকে ভালো করে ব্রাশের সাহায্যে পুরো মুখে ছড়িয়ে দিতে হবে। এতে ফাউণ্ডেশনও অনেকক্ষণ থাকবে, আর এটা ফাউণ্ডেশনকে সুন্দর ভাবে বসতে সাহায্য করে।

ব্লাশনঃ
সবশেষে ব্লাশন। এটা অনেকটা স্কিন টোনের ওপর নির্ভর করে। স্কিন টোন যেমন সেই অনুযায়ী লাগাতে হবে। যেমন ফর্সা স্কিনের ক্ষেত্রে লাইট কোরাল, পীচ,হালকা পিঙ্ক এসব ভালো লাগবে। আবার মিডিয়াম স্কিন টোনের ক্ষেত্রে, ডিপ পীচ, রিচ পিঙ্ক, মভ কালার ভালো লাগবে। আর স্কিন টোন চাপা হলে, ফুসিয়া পিঙ্ক, ব্রাউন এসব কালার ভালো লাগবে।

আইব্রোঃ
মুখের পর এবার চোখের পালা। কিন্তু চোখের মেকআপ শুরু করার আগে, ভুরুকে হাইলাইট করতে হবে। আলাদা আইব্রো ব্রাশ পাওয়া যায়। সেটা দিয়ে একটু মোটা করলে ভালো লাগবে। ব্রাশ দিয়ে একটু কালো করে আইব্রো কভার করতে হবে।

লাইনার ও মাস্কারাঃ
এবার আরেকটা খুব গুরুত্বপূর্ণ হল আই মেকআপ। ওইদিন চোখকে খুব সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তুলতেই হবে। চোখ ছোট হলে লাইনার মোটা করে পরলে ভালো লাগবে। আর চোখ যদি হয় বড় তাহলে, আইলাইনার মোটা করে পরার দরকার নেই। মিডিয়াম বা সরু করে পরলেই হবে।ওপরের পাতায় লাইনার পরার পর নীচের পাতায় কাজল। চোখের পাতা একটু বড় হলে ঘন করে মাস্কারা। না হলে চোখের পাতা কিনতে পাওয়া যায়। সেটা লাগালে আরও বেশি ভালো লাগবে। চোখের পাতা লাগিয়ে তার ওপর একটু মাস্কারা দিন, ব্যাস।

আইশ্যাডোঃ
এরপর আইশ্যাডোর পালা।ওইদিন কোন একটা রঙ নয়। দু-তিনটি রঙ ব্যবহার করে চোখকে হাইলাইট করলে ভালো লাগবে। বিয়ের কনের ওপর তাই সোনালী, কপার বা সিলভার রঙ ভালো লাগবে।চোখের কোণটাকে বেশি করে হাইলাইট করতে হবে। চোখের সামনের দিকে সোনালী বা সিলভার রঙ দিয়ে, শেষের কোণে একটু ডার্ক শেড দিয়ে হাইলাইট করলে ভালো লাগবে।

লিপঃ
লিপস্টিক স্কিন টোন ও শাড়ির রঙের সাথে ম্যাচ করে লাগাতে হবে। লিপস্টিক লাগানোর আগে, ঠোঁটে হালকা একটু ফাউণ্ডেশন লাগিয়ে নিতে হবে বা লিপ প্রাইমারও লাগানো যেতে পারে। এতে লিপস্টিক অনেকক্ষণ থাকবে। এবার লিপ লাইনার দিয়ে ঠোঁটে আউট লাইনটা করে নিতে হবে। তারপর লিপস্টিক লাগান। আর ঠোঁট খুব শুকিয়ে গেলে, ঠোঁটে ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিতে হবে। তারপর ঠোঁটের মেকআপ শুরু করতে হবে।